লম্বা হওয়ার উপায় | লম্বা হওয়ার খাদ্য তালিকা

হাসিবুর
By -
0

লম্বা হওয়ার উপায় | লম্বা হওয়ার খাদ্য তালিকা— লম্বা হতে চাই প্রতিটা ছেলে কিংবা মেয়ে সকলের মনের বাসনা একটাই। যারা বেশ ভালোই লম্বা তাদেরও মনে হয় আরো ১ থেকে ২ ইঞ্চি লম্বা হতে পারলে আরো বেশ ভালো মানাতো আমাকে! বংশগতি থেকেই নির্ধারিত হয়ে থাকে আপনি আসলে কতখানি লম্বা হবেন।

তবে এই কথাটিও ঠিক আপনার পূর্ব পুরুষেরা লম্বা হলেও যদি আপনি অপুষ্টিতে ভোগেন তাহলে আপনার বৃদ্ধি ঠিকমতো হবেনা। আর মানুষের দেহের বৃদ্ধি ঘটে সাধারণত ২৫ বছর বয়স পর্যন্তই। তাই কিশোর বয়স থেকেই এই ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। নিম্নোক্ত ৩টি বিষয়ের সমন্বয় লম্বা হতে সহায়তা করে থাকেঃ

১. পুষ্টিকর খাবার

২. পর্যাপ্ত বিশ্রাম

৩. নিয়মিত ব্যয়াম

লম্বা হতে চাইলে আপনাকে আপনার খাবার তালিকায় কি কি থাকতে হবে বা লম্বা হওয়ার খাদ্য তালিকা গুলো সম্পর্কে জেনে নিনঃ

লম্বা হওয়ার উপায়

মিনারেলস

পর্যাপ্ত পরিমাণ বিভিন্ন ধরনের মিনারেল আপনার খাবার তালিকায় রাখতে হবে। আমাদের শরীরে প্রতেকটি কাজের জন্য মিনারেলের ভূমিকা আছে। হাড়ের গঠন এবং আমাদের বৃদ্ধিতে মিনারেল একান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান। বিশেষ ভাবে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস যেন পরিমাণ মতো গ্রহণ করা হয় সেদিকে আপনাকে লক্ষ্য রাখতে হবে। 

বাধাকপি, ফুলকপি, দুধ বা দুগ্ধজাত খাবার, পালং শাক, পুই শাক, ছোট মাছ, খেজুর, ব্রোকলি ইত্যাদিতে ভালো পরিমাণে ক্যালসিয়াসম রয়েছে। মাছ, মাংস, দুগ্ধজাত খাবার, এমনকি সবজিতেও রয়েছে ফসফরাস। পর্যাপ্ত আয়রন পাওয়া যায় ডিমের কুসম, কলিজা, গরুর মাংস এবং খেজুরে। ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে লেবু, আপেল, ডুমুর, জাম্বুরা, ইত্যাদিতে। জিঙ্ক পাওয়া যায় সূর্যমুখীর বিচি এবং ডিমে।

ভিটামিন

আমাদের প্রয়োজনীয় সকল ধরনের ভিটামিনই বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি এবং ফলমুল থেকে পাওয়া যায়। কিন্তু খাবারের ভিটামিন শরীরে কতটুকু গৃহিত হয় সেটা বোঝা বেশ কঠিন ব্যাপার। তাই বিভিন্ন রকমের শাক-সবজি এবং ফলমুল খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। Vitamin B-1 রয়েছে চিনা বাদাম, লাল চাল, গমে। Vitamin B-2 রয়েছে মাছ, ডিম এবং দুধে। Vitamin B-6 আছে বাধাকপি, কলিজা, গরুর মাংস। মাছের তেলে রয়েছে ভিটামিন-ডি এবং দুগ্ধজাত খাবার থেকে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায়। ভিটামিন-ই রয়েছে সয়াবিনে, গমে এবং ডিমে। ভিটামিন-এ রয়েছে ডিমের কুসুমে, গাজোরে, দুধ এবং কলিজায়।

প্রোটিন

হাড়ের বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে মাংস পেশীরও বৃদ্ধি পেতে হবে লম্বা হওয়ার জন্যে। আর মাংস পেশির বৃদ্ধি এবং মজবুত হওয়ার জন্যে দরকার প্রোটিন। খাবার তালিকায় ভালোমানের প্রোটিন যেমনঃ মাছ, মাংস, ডিম তালিকায় রেখে দিন। বিভিন্ন ধরনের ডাল, মটরশুটি, সীম বীচি, কাঠাল বীচি ইত্যাদি থেকেও ভালোমানের প্রোটিন পাওয়া যায়। খাবার তালিকায় সয়া প্রোটিন, বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন সেইক যুক্ত করতে পারেন।

কার্বোহাইড্রেট

অনেকেই আছেন যারা লম্বা হওয়ার জন্যে কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাট জাতীয় খাবারগুলো বেশী পরিমাণে গ্রহন করেন। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, বেশী পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট লম্বা হওয়াকে বাধাপ্রদান করে। কেননা বেশী পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করা মানে রক্তে বেশী পরিমাণে গ্লুকোজ। যার কারণে ইনসুলিন নামক হরমোনও নিঃসৃত হয় বেশি এবং ইনসুলিন শরীরের গ্রোথ হরমোনের কার্যকারীতা হ্রাস করে দেয়। তাই প্রতিদিনের খাবার তালিকায় লাল চাল, লাল আটা, ছোলা ইত্যাদি রাখুন সাদা আটা, ময়দা, পলিশ চাউলের পরিবর্তে খাবার তালিকায় রাখুন।

পানি পান করুন

পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা লাগবে প্রতিদিন প্রায় ১.৫ থেকে ২ লিটার পানি পান করতে হবে।

যেসকল কারনে লম্বা হওয়া বাধাগ্রস্থ পায়

১. ঘুমের অভাবঃ নিয়মিত ৮ ঘন্টা করে ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন।

২. খেলাধূলা না করাঃ ফুটবল, ক্রিকেট, ভলি বল, বাস্কেট বল খেলার অভ্যাস গড়ে তুলুন। পাশাপাশি আপনাকে কিছু প্রসারিত ব্যায়াম করার প্রয়োজন হবে। যারা নতুন শুরু করছেন তারা প‌্রথমে অল্প কিছু প্রসারিত বায়ামগুলি, তারপর দড়ি লাফ এছাড়াও অন্যান্য ব্যায়াম করা শুরু করুন।

৩. অপুষ্টিঃ সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

৪. অঙ্গবিন্যাস ঠিক না থাকাঃ এই ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপিষ্টের সহায়তা নিতে হবে। 

৫. ত্যাগ করতে হবেঃ ধূমপান ও মদ্যপান করার অভ্যাস পরিহার করতে হবে। কেননা এগুলো দেহের হরমোনের ব্যালেন্সকে নষ্ট করে। মানুষের সুবিধার্থে অবশ্যই এই লম্বা হওয়ার উপায় সম্পর্কে আর্টিকেলটি শেয়ার করুন আপনার কাছের মানুষদের সঙ্গে। সুস্থ থাকুন, সুস্থ রাখুন। ধন্যবাদ।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0মন্তব্যসমূহ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন (0)