মোবাইল ব্যাংকিং সুরক্ষার ৫টি সহজ টিপস: অর্থ বাঁচান ও ঝুঁকি কমান!

হাসিবুর
By -

আমরা সবাই কমবেশি স্মার্টফোন, ল্যাপটপ, কম্পিউটারের মাধ্যমে ব্যাংকিং ট্রানজেকশন করি বা সুবিধা নিয়ে থাকি। আজকে আমরা কথা বলবো ইন্টারনেট ব্যাংকিং এর ব্যবহার সুরক্ষিত রাখতে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের কি কি সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। চলুন তাহলে জেনে নেই মোবাইল ব্যাংকিং সুরক্ষিত রাখতে কি কি বিষয় অবলম্বন করতে হবে।

মোবাইল ব্যাংকিং সুরক্ষার ৫টি সহজ টিপস

১. পাবলিক ওয়াইফাই বা ইন্টারনেট ব্যবহার

অনেকের মধ্যে পাবলিক ইন্টারনেট বা ওয়াইফাই ব্যবহারের প্রবণতা বেশি থাকে। কখনো কখনো এ ধরণের ওয়াইফাই ব্যবহার করলে ডিভাইসের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে এবং সাইবার অ্যাটাকের সম্ভাবনা থেকে যায়। এক্ষেত্রে আপনার তথ্য চুরি বা গোপনীয়তা নষ্ট হতে পারে।

আরও জানুন- বাংলাদেশের সেরা ২০টি ই-কমার্স সাইট

পাবলিক ওয়াইফাই ব্যবহার করে যদি কোন সাইটে লগইন বা ট্রানজেকশন করা হয়। তাহলে সেসব তথ্য হ্যাকারদের দখলে চলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা সহজতর হয়। জানিয়ে রাখি এই প্রক্রিয়ায় হ্যাকাররা সুচতুর ভাবে ম্যান এন দা মিডল অ্যাটাক বা ম্যালওয়ার ডিস্ট্রিবিউশনের মাধ্যমে আপনার গুরুত্বপূর্ণ ক্রেডেনশিয়াল তথ্য হাতিয়ে নিতে পারে।

২. ক্লাউডস স্পেস ব্যবহার করুন

কথা বলা ছাড়াও আমরা স্মার্টফোনের মাধ্যমে আমরা দৈনন্দিন অনেক কাজ করে থাকি। জমতে থাকে আমাদের অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বা ডেটা। এই সকল তথ্য নিয়মিত ব্যাকআপ রাখা উচিত। ফোনের বা অন্যান্য কোন বিশ্বস্ত ক্লাউডস স্পেসে আমাদের ফোনের ডেটা আবার প্রয়োজনীয় তথ্যাদি নিয়মিত ব্যাকআপ করে রাখতে পারি।

অনেক ক্লাউড সার্ভিস একটা নির্দিষ্ট পরিমাণে স্পেস ফ্রিতে ব্যবহার করা যায় বা প্রয়োজন অনুযায়ী আমি কিনে নিতে পারি। এতে করে যদি আমাদের ফোনটা হারিয়ে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। আমরা ক্লাউডস স্পেসে লগইন করে প্রয়োজনীয় সকল ডেটা সমূহ নিয়ে নিতে পারি। ফোনের প্রয়োজনীয় ডেটা প্রতিনিয়ত ব্যাকআপ করে রাখুন।

৩. IMEI নাম্বার সংরক্ষণ করুন

স্মার্টফোনের ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুপমেন্ট আইডেন্টিটি বা আইএমইআই সংরক্ষণ করে রাখতে হবে। জানিয়ে রাখি আইএমইআই নম্বরটি প্রত্যেকটি ফোনের জন্য আলাদা হয় এবং প্রত্যেকটি ডিভাইসকে আলাদা আইডেন্টিটি প্রদান করে থাকে। এটি ফোনের বক্সে উল্লেখ করা থাকে আবার ফোন থেকে *#০৬# ডায়াল করলেও জানা যাবে। মনে রাখবেন আপনার ফোন চুরি যাওয়া ফোন খুঁজে পেতে এই নাম্বারটি প্রয়োজন।

আরও জানুন- মোবাইল রিপেয়ারিং করার পূর্বে যা করণীয়

৪. ফোন লক ব্যবহার করুন সবসময়

ফোনে সবসময় স্ক্রীন লক ব্যবহার করুন। ফোনে সব সময় আপনার সুবিধামতো অন্তত একটি হলেও স্ক্রীন লক ব্যবহার করুন। ফোনের পিন, পাসওয়ার্ড, প্যাটার্ন বা বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন অন রাখুন। ফলে ফোনে আন অথরাইজড এক্সেস বন্ধ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে আপনার ফোনটি যদি হারিয়ে যায় বা চুরি হয়ে যায় আপনার ফোনে কেউ এক্সেস নিতে পারবে না। আর আপনার তথ্য থাকবেন নিরাপদ।

তাই ফোনের পিন, পাসওয়ার্ড, প্যাটার্ন বা বায়োমেট্রিক অথেন্টিকেশন এগুলোর অন্তত একটি বা অধিক যে কোন একটি অপশন অন রাখুন এবং নিরাপদ থাকুন।

৫. ফোনের অপেরাটিং সিস্টেম আপডেট রাখুন

ফোনের অপারেটিং সিস্টেম আপডেট রাখুন। অপারেটিং সিস্টেমের প্রত্যেকটি আপডেটের মাধ্যমের আসে নতুন নতুন সিকিউরিটি প্যাচ যা ম্যালওয়্যার থেকে ফোনকে সুরক্ষিত রাখে। আমাদের অনেকের মধ্যে এমনও ধারণা প্রচলিত আছে যে ফোনকে আপডেট করলে ফোন স্লো হয়ে যাবে। বস্তুত ফোনকে নিরাপদ ও বাগ মুক্ত রাখতে আপডেট প্রয়োজন। এতে ফোনের সুরক্ষা ব্যাবস্থা ও কার্যকারিতা ভালো থাকবে।

উপসংহার

মোবাইল ব্যাংকিং সুরক্ষার জন্য কিছু সহজ টিপস অনুসরণ করলে আমাদের আর্থিক তথ্য ও লেনদেন নিরাপদ রাখা সম্ভব।

প্রথমত, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার এবং নিয়মিত পরিবর্তন করা উচিত। দ্বিতীয়ত, সন্দেহজনক লিঙ্ক ও অ্যাপ থেকে দূরে থাকা জরুরি।

তৃতীয়ত, অপ্রয়োজনীয়ভাবে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা থেকে বিরত থাকা উচিত।

চতুর্থত, ব্যাংকিং অ্যাপ্লিকেশন আপডেট রাখা এবং সর্বদা নির্ভরযোগ্য উৎস থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করা উচিত।

সর্বশেষে, ফিশিং আক্রমণ থেকে বাঁচতে ব্যাংকের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে তথ্য যাচাই করা উচিত। এই সহজ টিপসগুলি মেনে চললে মোবাইল ব্যাংকিং আরও নিরাপদ ও নিশ্চিন্ত হবে।