প্রবীণদের মানসিক সুস্থতার ৫টি উপায়

হাসিবুর
By -

বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের নাম হচ্ছে নভেল করোনাভাইরাস। এর থেকে রক্ষার কোন কার্যকর উপায় বর্তমানে জানা নেই। প্রতিটি ক্ষেত্রেই এর প্রভাব লক্ষ্যনীয়। সকল বয়সের মানুষই এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। ছোট বাচ্চাদের স্কুল বন্ধ, তারা মাঠে খেলতে পারছে না, বন্ধুদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে না, তারপর ওয়ার্ক ফ্রম হোম সামলানো বাবা-মায়ের জন্যে নতুন চ্যালেঞ্জ।

প্রবীণদের অধিকাংশই তাঁদের নিজ নিজ কর্ম থেকে অবসরে গিয়ে ঘরবন্দি হয়ে জীবন কাটাচ্ছেন। ৬০ বছরের অধিক বয়সীদের মনঃসামাজিক, শারীরিক, আর্থিক এবং পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ গুলির সাথে বয়সজনিত স্বাস্থ্য সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। তাই প্রবীণ নাগরিকদের মানসিক সুস্থ্যতার উপায় নিয়ে আমরা আলোচনা করবো আজকের এই আর্টিকেলে।

প্রবীণদের মানসিক স্বাস্থ্যসেবা

করোনা ভাইরাসে সবথেকে বেশি ঝুঁকিতে বয়স্ক ও শিশুরা। তাই বয়স্কদের করোনাকালীন রুটিন একটু বেশি কঠিন। এতে তাঁদের মানসিকতার ওপর কিছুটা চাপ পড়েছে। তাঁদের মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে কীভাবে আরও ভালো রুটিন তৈরি করা যায়, সে চেষ্টাই করা হয়েছে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক প্রবীণদের সুস্থ্য রাখার পাঁচ উপায় সম্পর্কে—

১. মানসিক সমর্থন

প্রবীণদের সাথে নিয়মিত করে আলাপ-আলোচনা করুন। তাঁদের মধ্যে বিভিন্ন চিন্তার প্রক্রিয়া আছে, যা তাঁদের মনের মধ্যে প্রভাব ফেলতে পারে। অনিশ্চয়তার ভয়, সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা, পরিবারের সদস্যদের সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কার ফলে তাঁদের স্ব-অবহেলা, ঘুম কমে যাওয়া ও উদ্দীপনা বাড়তে পারে। তাই তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত আলাপনে এসব জেনে মানসিক সমর্থন দেওয়া যেতে পারে। চা ভাগাভাগি করে খাওয়ার সময় বা নাশতার টেবিলেও হতে পারেে আলাপন।

আরও পড়ুনঃ ডায়াবেটিস রোগীর ব্যায়াম | ব্যায়ামের মাধ্যমে ডায়াবেটিস কমান

২. উৎসাহ দিন

বৃদ্ধ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষ সাধারণত অনমনীয় হয়ে ওঠে এবং কিছুটা আত্মকেন্দ্রিক হয়ে ওঠে। করোনাভাইরাসের সর্বোচ্চ সীমাবদ্ধতা হলো সামাজিকীকরণ। এ ক্ষেত্রে তাঁদের অডিও-ভিডিও কল, কনফারেন্সিংয়ের মতো ডিজিটাল মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে উৎসাহ জোগানো যেতে পারে। এখন অনেক প্রবীণই অ্যান্ড্রয়েট ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা সামাজিকভাবে সংযুক্ত থাকতে পারেন। যদিও অধিকাংশ প্রবীণই গান শোনা ও ভিডিও দেখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকেন। তাঁদের সাথে প্রতিদিন অডিও এবং ভিডিও কনফারেন্সিংয়ে করার মাধ্যমে উৎসাহিত করা যেতে পারে।

৩. সঠিক তথ্য জানানো

প্রবীণেরা করোনা মোকাবিলায় তাঁদের দুর্বলতা সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত। তাঁরা ভালো করেই জানেন, করোনার চিকিৎসায় তাঁদের বেশি সমস্যা হতে পারে। এই আশঙ্কা ও ভয় স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত উদ্বেগ এবং আতঙ্ক তাঁদের দুর্বল করে ফেলতে পারে। এই জন্য করোনাভাইরাস সচেতনতা সম্পর্কে প্রতিদিন সঠিক তথ্য জানাতে হবে। এতে করে মানসিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে। 

৪. মুক্ত আলোচনা

পেশাদারত্ব ও দায়বদ্ধতার মধ্যে সঠিক ভারসাম্য রক্ষাতে শিশু এবং প্রবীণদের যুক্ত করা প্রয়োজন। যদি আপনি প্রতিদিন আপনার বাচ্চা এবং প্রবীণদের সাথে একসাথে বসে নানান আলোচনা করেন, তাহ্লে তাঁদের বদ্ধ জীবনের প্রতি বিরক্তি দূর করা সম্ভব হবে। তাঁরা অনেক অজানা সম্পর্কে জানবেন। আপনারও ঘরোয়া কাজ, সম্মিলিত ওয়ার্ক-আউট, গেমিং, পড়াশোনা ও চলচ্চিত্র-সংগীত সবকিছুর সামঞ্জস্যতা বজায় থাকবে।

৫. ই-পরামর্শ

একাধিক পরামর্শের নেয়ার কিছু অনলাইনে অনেক গ্রুপ সক্রিয় আছে। পৃথক পৃথক সমস্যার সমাধানের জন্য অনলাইনে একাধিক গ্রুপ আছে। তাঁদের কাছে থেকে যেকোন পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে। অথবা নিজস্ব ডাক্তারের সাথেও ভার্চুয়াল পরামর্শ নিতে পারেন। এছাড়াও নিয়মিত তদারকি তো আছেই। নিয়মিত ওষুধ সেবন করছেন কিনা, খাওয়া-দাওয়া, ঘুম—এসব বিষয়েও তদারকি থাকতে হবে।

আরও পড়ুনঃ কিভাবে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠা সম্ভব তার ১০টি উপায়