পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় - পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে খোঁজ করছেন? তাহলে সঠিক জায়গায় এসেছেন। কেননা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে জেনে নিন।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে আপনাদের জন্য নিচে ধাপে ধাপে আলোচনা করা হয়েছে। যেগুলো পড়ে আপনারা খুব সহজেই পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন। তাই আর বিলম্ব না করে চলুন পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে আলোচনা করা যাক।
{tocify} $title={Table of Contents}
ভূমিকাঃ পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়
আপনাদের মধ্যে অনেকে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ করে থাকেন পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে। প্রতিটা মেয়ের ক্ষেত্রেই পিরিয়ড হওয়া এবং পিরিয়ডের সময় ব্যথা হওয়া কমন বিষয়। তবে সবার ক্ষেত্রে এক রকম ব্যথা হয় না। কারো কারো ক্ষেত্রে বেশি এবং কারো কারো ক্ষেত্রে কম হয়ে থাকে।
তাই আপনাদের মধ্যে অনেকেই জানার আগ্রহ প্রকাশ করে থাকেন পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে। পিরিয়ডের সময় বিভিন্ন কারণে ব্যথা হতে পারে। আর এই কারণগুলো সম্পর্কে আপনাদের জেনে থাকা অত্যন্ত জরুরী। পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জানতে আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
আরো পড়ুনঃ কালোজিরার ঔষধি গুন
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়
নারীদের পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া। মাসের বিশেষ এ দিনগুলোতে হরমোনের পরিবর্তন হয়। ওই সময় পেটে ব্যথা হয় অনেকের। এমনকি শরীরেও ব্যথা হতে পারে। এছাড়া মুড সুইং বা মেজাজ ওঠানামা, ক্লান্তিতো রয়েছেই। তবে কিছু কিছু উপায় আছে যেগুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে পিরিয়ডের ব্যথা কমানো যায়।
সাধারণত ব্যথা হলে পেনকিলার খাওয়ার মাধ্যমে অনেক সময় ব্যথা কমানো যায়। তবে এছাড়াও আরো বিভিন্ন রকম উপায় রয়েছে যেগুলো আপনারা অবলম্বন করে পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে পারবেন। আর এই উপায় গুলো সম্পর্কে আপনাদের জেনে থাকা অত্যন্ত জরুরী। পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় গুলো হলোঃ
১। অ্যারোমাথেরাপি তেল দিয়ে গরম গোসল করা।
২। সব সময় আপনার সাথে একটি উষ্ণ পানির বোতল রাখুন।
৩। পিঠ ও পেটে ম্যাসাজ করুন। এটি কিছু মহিলাদের জন্য অত্যন্ত কার্যকর।
৪। আপনার মাসিকের আগে এবং চলাকালীন কয়েকদিন ঢিলেঢালা পোশাক পরুন।
৫। যোগব্যায়ামের মতো মৃদু ব্যায়াম করুন। মাসিকের আগে নিয়মিত বিশ্রাম নিন। এটি প্রথম কয়েক দিন পেশীগুলিকে শিথিল করতে সাহায্য করে এবং নিঃসৃত অঞ্চলে রক্ত প্রবাহ উন্নত করে।
৬। নিয়মিত ঘুমানোর আগে একটি ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট খেয়ে নিন।
৭। পিরিয়ডের সময় আয়রন সাপ্লিমেন্ট খেতে পারেন।
৮। পিরিয়ডের এক সপ্তাহ আগে প্রতিদিন সকালে জাফরান ও কিসমিস ভেজানো পানি পান করুন।
পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়
ইতোমধ্যে আপনারা জানতে পেরেছেন পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে। আর এইবার আপনারা জানতে পারবেন পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় সম্পর্কে। বেশিরভাগ নারীর পিরিয়ডের সময় ব্যথা হয়। ব্যথা অনেকের কম আবার অনেকের অসহনীয় পর্যায়ে চলে যেতে পারে।
কিছু ঘরোয়া প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আপনারা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে পারবেন। পিরিয়ডের সময় ভিটামিন এবং মিনারেল জাতীয় খাবার খাওয়া জরুরি। প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে। তাই এই সমস্যার সমাধানের জন্য ঘরোয়া উপায় এর উপর বেশি জোর দেওয়ায় শ্রেয়। পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায় গুলো নিম্নে দেওয়া হলোঃ
১। গরম পানির সেক - পিরিয়ডের ব্যথায় গরম পানির সেক খুব উপকারী। হট ব্যাগের মধ্যে গরম পানি নিয়ে পেটে শেক ও গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন। এটি আপনার পেটের ব্যথা কমিয়ে স্বস্তি দেবে।
২। আদা - পেটের ব্যথা কমাতে আদার রস বেস উপকারী। এ সময়ে আদা চা পান করলে বেশ উপকার পাওয়া যায়। এছাড়াও টুকরো আধার সঙ্গে মধু, চিনি ও গরম পানি যোগ করে তিন-চারবার পান করতে পারেন।
৩। পেঁপে - পিরিয়ডের ব্যথার রোধের জন্য পেঁপে খাওয়া বেশ কার্যকর। পিরিয়ডের সময় নিয়মিত কাঁচা পেঁপে খান। কাঁচা পেঁপে পিরিয়ডের ব্যথা কমিয়ে দেয়।
৪। অ্যালোভেরা রস - অ্যালোভেরা রসের সঙ্গে মধু মিশিয়ে একটি জুস তৈরি করে ফেলুন। পিরিয়ডের ব্যথার সময় এটি পান করুন। দিনে কয়েকবার এটি পান করুন। ব্যথা অনেকখানি কমিয়ে দেবে।
৫। হালকা ব্যায়াম করুন - ব্যথার কারণে পিরিয়ডের সময় ব্যায়াম করতে পারেন না অনেকে। কিন্তু একটি সমীক্ষা অনুযায়ী সহজ সরল যোগব্যায়াম, হাঁটাচলা করলে ব্যথা কমতে পারে। তবে এ সময় ভারী কোন কাজ করা উচিত নয়।
৬। পানী জাতীয় খাবার - পিরিয়ডের সময় প্রচুর পরিমাণে পানি এবং পানি জাতীয় খাবার খান। কেননা এই সময়টায় শরীরে পানিসূন্যতা দেখা দেয়।
আরো পড়ুনঃ লম্বা হওয়ার উপায়
পিরিয়ডে পেটে ব্যাথা হলে যে ৫ খাবার এড়িয়ে চলবেন
পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রে দেখা যায়। পিরিয়ডের সময় অস্বাভাবিক পেটে ব্যথায় ভোগেন তারা। নানারকম ওষুধ খেয়েও এ ব্যথা কমানো সম্ভব হয় না। আবার ব্যাথার ঔষধ নিয়মিত খাওয়াও কোন কাজের কথা নয়। তাই খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে হবে। এমন অনেক খাবার আছে যেগুলো এই সময়ে খেলে ব্যথা আরো বেড়ে যায়। তাই সেসব খাবার তালিকা থেকে বাদ দিতে হবে। পিরিয়ডের সময় পেটে ব্যথা হলে যে ৫ খাবার এড়িয়ে চলবেনঃ
চা ও কফি- চা ও কফি এমনিতে উপকারী। তবে অনেক নারীর ক্ষেত্রে পিরিয়ডের সময় চা কিংবা কফি খেলে পেটে ব্যথা আরো বেড়ে যায়। আপনিও যদি এই সমস্যায় ভুগেন তবে এই সময়টাতে চা ও কফি এড়িয়ে চলুন। তবে একেবারে বাদ না দিয়ে দিনে একবার খাওয়া যেতে পারে, এর বেশি নয়। এছাড়াও সবরকম কমল পানীয় বাদ দিন এই সময়ে। এর ফলে পেটে ব্যথার সমস্যা কমবে অনেকটাই।
ফাস্টফুড- ফাস্টফুড জাতীয় খাবার সব সময় অপকারী। পিরিয়ডের সময় এই খাবার আরো বেশি এড়িয়ে চলা উচিত। এ ধরনের খাবার শরীরে নানা অস্বস্তি, পেটে ব্যথা অনেকটাই বাড়িয়ে দেয়। তাই পিজ্জা, বার্গার ও ফ্রেঞ্চ ফ্রাই কিংবা এ জাতীয় যেকোন খাবার যতই ভালো হোক না কেন এড়িয়ে চলার চেষ্টা করতে হবে।
লবণ- খাবারের তালিকা থেকে লবণ একেবারে বাদ দেবেন না। কারণ লবণ ছাড়া খাবার খাওয়া সম্ভব নয়। তবে পিরিয়ডের সময় চেষ্টা করুন লবণটা একটু কমিয়ে খেতে। খাবারের সঙ্গে বাড়তি লবণ নিয়ে খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তা বাদ দিতে হবে। অতিরিক্ত লবণ খাওয়া শরীরের জন্য মোটেই উপকারী নয়। আর এ সময় অতিরিক্ত লবণ খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
দুধ- দুধ পানে আছে অনেক উপকারিতা। কিন্তু পিরিয়ডের সময় দুধ পান করলে অনেকের পেটে ব্যথা হতে পারে। তাই অস্বস্তি এড়াতে এ সময় দুধ পান করা থেকে বিরত থাকুন। দুধ জাতীয় খাবার এ সময় পেট ব্যথা বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই দুধ খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে।
চিনি- চিনি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য তেমন উপকারী নয় একথা সবারই জানা। এটি পিরিয়ডের সময় পেটের ব্যথার সমস্যা আরো বাড়িয়ে তুলতে পারে। তাই পিরিয়ডের সময় চিনি খাওয়ার পরিমাণ একেবারে কমিয়ে দিন। চিনি যত কম খাবেন তত উত্তম।
আরো পড়ুনঃ ব্লগ সাইট খোলার নিয়ম
শেষ কথাঃ পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায়
পিরিয়ড একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা থামানো বা বাধা দেওয়া যায় না, তবে তা দ্বারা সৃষ্ট ব্যথা এবং অন্যান্য অস্বস্তি দূর করা যেতে পারে। নারীরা যদি কিছু সতর্কতা অবলম্বন করেন এবং এড়িয়ে যান তাহলে তারা পিরিয়ডের কারণে সৃষ্ট সমস্যা থেকে স্বাচ্ছন্দে বেরিয়ে আসতে পারবেন।
উপরে যে উল্লেখিত উপায় গুলো দেওয়া হয়েছে সেগুলো অবলম্বন করার মাধ্যমে আপনারা খুব সহজেই পিরিয়ডের ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে পারবেন। তবে এর জন্য অবশ্যই রুটিনের পরিবর্তন এবং খাদ্যাভাসের ভারসাম্য বজায় রেখে এটি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
আশা করি তাহলে আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে বুঝতে পেরেছেন।
এরকম সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করতে পারেন। আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই বেশি বেশি করে শেয়ার করবেন এবং অন্যদেরও পড়ার সুযোগ করে দেবেন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।