সন্তান মহান আল্লাহর তরফ থেকে এক অমূল্য নেয়ামত। সন্তান গর্ভে আসার পর একজন মা খুবই চিন্তায় থাকেন তার সন্তানকে নিয়ে। কেননা আমরা সকলেই জানি প্রথম তিন মাসে গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি থাকে। তাই এই সময় একজন মা খুবই চিন্তিত থাকেন এবং তিনি জানতে চান কি আমল করলে তার সন্তান গর্ভে নিরাপদে থাকবে। শুধু প্রথম তিন মাসে নয় সন্তান যতদিন গর্ভে থাকে ততদিন একজন মায়ের চিন্তা থাকে তার সন্তান যেন গর্ভে সঠিকভাবে বেড়ে ওঠে।
ধর্মপ্রাণ মা সব সময় তার সন্তানের জন্য কিছু না কিছু আমল করতে চায়। তাই তারা জানতে চায় বাচ্চা পেটে আসলে কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি নতুন মায়েদের জন্য। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পড়ে নতুন মায়েরা জানতে পারবে বাচ্চা পেটে আসলে কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়। তাই দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক বাচ্চা পেটে আসলে কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়।
(toc) #title=(সুচিপত্র)
বাচ্চা পেটে আসলে কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয়
অনেকে জানতে চান, বাচ্চা পেটে আসলে কোন সূরা পড়ব? উত্তর হলো, গর্ভাবস্থার জন্য মূলত নির্দিষ্ট করে উল্লেখ করা কোনও সূরা নেই। তবে হ্যাঁ কোনো বুজুর্গ সূরার বিষয়বস্তুর প্রতি লক্ষ রেখে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এভাবে,
- প্রথম মাসে সূরা আল ইমরান পড়লে সন্তান দামী হবে এবং আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তান দ্বীনের পথে চলবে।
- দ্বিতীয় মাসে সূরা ইউসুফ তেলাওয়াত করলে আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তানের প্রকাশ্য ও ব্যক্তিগত উভয় দিকই সুন্দর হবে।
- তৃতীয় মাসে সূরা মারিয়াম পড়লে আল্লাহর রহমতে অনাগত সন্তান তাকওয়া ও তাকওয়া অর্জন করবে এবং সন্তান সহিষ্ণু হবে।
- চতুর্থ মাসে সূরা লোকমান পড়লে সন্তান তেলাওয়াত করলে আল্লার রহমতে গর্ভের সন্তান হবে তীক্ষ্ণ ও জ্ঞানী।।
- পঞ্চম মাসে সূরা মুহাম্মদ পড়লে আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তান খুব ভালো চরিত্রের অধিকারী হবে অর্থাৎ সন্তান চরিত্রবান হবে।
- ষষ্ঠ মাসে সূরা ইয়াসিন পড়লে সন্তান জ্ঞানী হবে।
- সপ্তম, অষ্ঠম, নবম ও দ্বশম মাসে সূরা-ইউসুফ, মুহাম্মদ এবং ইব্রারাহিম কিছু কিছু পড়বে।
- ব্যাথা উঠলে সূরা-ইনশিকাক পড়ে পানিতে ফুক দিয়ে পান করলে ব্যথা কমে যাবে। সূরা ইনশিরাক তিলাওয়াত করলে অনাগত সন্তান সব ধরনের ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকবে ইনশাআল্লাহ।
তাছাড়া ঘুমের পূর্বে অবশ্যই চার কুল তথা সূরা কাফিরূন, সূরা ইখলাস ও সূরা ফালাক এবং সূরা নাস পড়ে হাতের তালুতে ফু দিয়ে সারা শরীরে হাত বুলিয় নিলে বহুবিধ ফায়দা পাওয়া যায়। এভাবে তিনবার করবেন।
গর্ভবতী মায়ের শেষের তিন মাসের আমল
আপনি যখন গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে প্রবেশ করেন, তখন কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এ সময় গর্ভে থাকা শিশু এবং সন্তানের মা উভয়ের মনই বেশি অস্থির থাকে, তার কারণ এখানে ধৈর্যের পরিচয় দিতে হয়। তাই অবশ্যই এই সময়ে আপনি আল্লাহর কিছু আমল করতে পারেন যেমন সূরা মরিয়ম এবং সূরা মুহাম্মদ তেলাওয়াত করা।
আপনি যদি গর্ভবতী অবস্থায় সূরা মরিয়ম পাঠ করেন, তাহলে সন্তান হবে পবিত্র ও খোদাভীরু। সন্তান ধার্মিক ও খোদাভীরু হলে পিতা-মাতার জন্য এর থেকে ভালো আর কিছু হতে পারে না। আর যারা সূরা মুহাম্মদ তেলাওয়াত করে তাদের গর্ভের সন্তান সুন্দর চরিত্র এর অধিকারী হয়ে থাকে। তাই অনাগত সন্তানের জন্য এই কাজগুলো নিয়মিত করতে হবে যা আপনার অনাগত সন্তানকে পরিপূর্ণ করবে।
আরো পড়ুনঃ মায়ের রক্তের গ্রুপের সাথে সন্তানের রক্তের গ্রুপ মিলেনা কেন?
গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল
গর্ভের সন্তানকে ফর্সা করার আমলটি খুব ছোট হলেও এর ফজিলত অনেক। তাই আমি যে আমলটি বলবো তা পড়লে গর্ভের সন্তান ফর্সা তো হবেই এবং আরো দুটি উপকার হবে। চলুন জেনে নিই গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার আমল সম্পর্কে।
গর্ভের সন্তানকে সুন্দর করার কাজটি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের। আল্লাহ তায়ালার একটি একটি গুণবাচক নাম “ইয়া গফুরু”। আপনারা অনেকেই জানেন যে আল্লাহর এই নামের অনেক উপকারিতা রয়েছে।
তাই গর্ভাবস্থায় আল্লাহর এই নামটি পড়লে যে উপকারিতা পাওয়া যাবে তা হলো, সন্তানের ওজন বাড়বে, সন্তান নষ্ট হবে না এবং সন্তান ফর্সা হবে। যদি কেউ আপনার সন্তানের প্রতি কুদৃষ্টি রাখে বা গর্ভের সন্তানকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে, তাহলে আল্লাহর বরকতময় নাম পাঠ করলে আপনার সন্তানকে সেই অশুভ শক্তি থেকে রক্ষা করতে পারে।
বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর
গর্ভের সন্তান ফর্সা হওয়ার দোয়া কি?
গর্ভের সন্তান ফর্সা হবে নাকি কালো হবে তা একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছা এবং অনেকটা জেনেটিক। কিন্তু আপনি যদি সন্তান গর্ভে আসার পর আল্লাহুম্মা জাম্মিলহু ইয়া নুর"। এই দোয়াটি পড়েন তাহলে আল্লাহর রহমতে আপনার সন্তান ফর্সা হবে।
কি খেলে গর্ভের সন্তান ফর্সা হয়?
সন্তান ফর্সা হওয়ার জন্য আপনাকে জাফরান, দুধ, নারিকেল, ডিম, চেরি কমলা লেবু এই ধরনের খাবার খেতে হবে।
কি পাঠ করলে গর্ভের সন্তান খুব ভালো চরিত্রের অধিকারী হবে?
সূরা মুহাম্মাদ পাঠ করলে আল্লাহর রহমতে গর্ভের সন্তান খুব ভালো চরিত্রের অধিকারী হবে
লেখকের শেষ কথা
আমরা আমাদের আজকের আর্টিকেলে আপনাদের জানিয়েছি বাচ্চা পেটে আসলে কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয় এই সম্পর্কে। আমাদের আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে আপনারা বাচ্চা পেটে আসলে কোন মাসে কোন সূরা পড়তে হয় সেই সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাবেন। আশা করি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি পরে আপনারা উপকৃত হবেন। এইরকম আরো নতুন নতুন পোস্ট করতে আমাদের ওয়েবসাইটে চোখ রাখুন।