ফেসবুকে যে কাজগুলো করা উচিত নয়

হাসিবুর
By -

ফেসবুকে যে কাজগুলো করা উচিত নয় — বর্তমান সময়ে আমাদের নিত্যদিনের একটি কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে ফেসবুকের ব্যবহার। কখন কি করছেন, কখন কি খাচ্ছেন সকল কিছুই এখন ফেসবুকে। যেন আমাদের প্রতিটি মুহূর্তকে আপডেট ফেসবুকে শেয়ার না করলে আমাদের ভালো লাগেনা। আর হ্যাঁ এই ফেসবুককে ব্যবহার করতে গিয়েই অনেকেই অনেক সময় লজ্জাজনক অবস্থার সম্মুখীন হন।

আবার কেউ জানেই না যে সে একটু ভুল করে বসে রয়েছে। যা তার ব্যক্তিতের জন্যই খারাপ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। অনেক সময় দেখা যায় যে অনেকেই আছেন যারা এভাবে ছোটো ভুল করে তাদের চাকরি পর্যন্ত হারাচ্ছেন। তাই আপনার যে কাজগুলো ফেসবুকে করবেন না তা নিয়েই মূলত আমাদের আজকের আর্টিকেল।

নিজের ছবি/পোস্টে লাইক দিবেন না

অনেকেই আছেন যারা নতুন স্মার্টফোন কিনে সেই ফোনের ছবি ফেসবুকে আপলোড করেন। যেহেতু আপনি সেই ছবিটি আপলোড করেছেন তার মানে আপনি আসলেই সেই স্মার্ট ফোনটি পছন্দ করেছেন। তাই বলে আপনার আপলোড করা ছবিতেই লাইক, কমেন্ট করে আপনি ফোনটি কতটা পছন্দ করছেন সেটা বুঝাতে হবে তা কিন্ত নয়।

আবার অনেকে মনে করেন যে ছবিতে লাইক দিলে তার ছবিটিকে বেশি বেশি নিউজ ফিডে প্রদর্শন করবে। তাই মূলত এই কাজটি করে থাকেন। আর হ্যাঁ এটিও ভুল। সেই সঙ্গে তারা নিজের মার্কেটিং করছে বলেও অনেকের মনে হয়। তাই আপনার উচিত এই কাজটি না করা, সাধারণত এটি একটি বোকামি ও আপনার ব্যক্তিতের একটি দুর্বলতা।

আরও পড়ুনঃ মোবাইল ব্যাংকিং সুরক্ষায় করণীয়

এলোমেলো ভাবে মানুষকে ট্যাগ করবেন না 

একটি ইমেজ আপলোড করে অথবা একটি আর্টিকেল লিখে এলোমেলো ভাবে অনেককে ট্যাগ করেন? এই ভাবে ট্যাগ করলে হয়বাতো আপনি যাদেরকে ট্যাগ করছেন যার কারণে তারা বিরক্ত হবে। মূলত ট্যাগ বিষয়টি তখনই চলে আসে যখন কোনো ছবিতে আপনি বাদেও অন্য কেউ থাকবে এবং তাদেরকে ট্যাগ করবেন। যেমন কোন জায়গাতে ঘুরতে গিয়েছেন বলে ফেসবুকে পোস্ট শেয়ার করছেন, সেখানে আপনার সঙ্গে কে কে আছেন তাদেরকে ট্যাগ করা। 

অর্থাৎ সরাসরি যারা সেই পোস্টের সঙ্গে যুক্ত তাদেরকে ট্যাগ করার ফিচারস এটি। বিনা কারণে ফেসবুকে ট্যাগ করে অনেকেই ফেসবুক থেকে ব্লকের শিকার হয়ে থাকেন এবং অনেক সময় দেখা জায় নিজের একাউন্ট স্প্যাম হিসেবে ফেসবুকে রিপোর্ট পেয়ে জায়। তাই ফেসবুক ট্যাগ ফিচারটি বুঝে শুনে ব্যবহার করুন।

অন্যের জন্য অস্বস্তিকর পোস্ট

অনেক সময় অনেকেই আছেন যারা এমন ধরনের ছবি বা পোস্ট করে থাকেন যা তাদের ফ্রেন্ডলিস্টের অনেকের জন্যেই অস্বস্তিকর। উদাহারণ হিসাবে সিগারেট খাওয়ার ছবি বলা চলে। আপনি হয়তোবা ভাবছেন এটা তো আপনার ব্যক্তিগত ব্যাপার কিন্ত আপনাকে হয়তো অনেকেই এতে ব্যাপারটাকে ছোট করেই দেখছে এটার কারণে। যা আপনার ব্যক্তিত্বকে নষ্ট করার জন্যে যথেষ্ট। তবে হ্যাঁ এখানে সিগারেট খাবার ব্যাপারটা উদাহারণ মাত্র। অন্যান্য অনেক কিছুও এটার অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

চাকরি নিয়ে অভিযোগ ও তথ্য শেয়ার

আপনি যেখানে কর্তবরত আছেন বা পূর্বের চাকরি নিয়ে কোনো অভিযোগ আছে আপনার এবং সেটা ফেসবুকে পোস্ট করছেন? এটা হয়তোবা আপনার জন্যে ক্ষতির কারণও হয়ে দাঁড়াতে পারে। যেমন- অফিসের সিনিয়র লেভেলের কেউ দেখে তার উপরে ভিত্তি করে অভিযোগ দিতে পারে। যার কারণে চাকরি হারাতে পারেন। আবার আপনি যেখানে চাকরি করছেন সেখানকার সেনসিটিভ তথ্য ফেসবুকে শেয়ার করছেন অথবা চাকরিতে কি করছেন সেটা শেয়ার করেও একি ধরনের সমস্যায় পরতে পারেন। তাই চাকরি নিয়ে কোনো অভিযোগ বা কি করছেন সেটা শেয়ার না করাই উত্তম।

আরও পড়ুনঃ AC কিভাবে কাজ করে? AC কেনার সময় কি কি জানা দরকার?

অন্য ফ্রেন্ডের পোস্ট ছবি শেয়ার

আপনার কোনো বন্ধু বিয়ে করছেন অথবা একটি ছবি আপলোড করছেন? সেখানে আপনি লাইক এবং কমেন্ট করতেই পারেন কিন্তু পোস্টটি শেয়ার করা? বা তাদের প্রোফাইল ইমেজ শেয়ার করা? হয়তোবা এতে আপনি সকলকে বিভ্রান্ত করছেন এবং মূলত আপলোড কারীকেও অস্বস্তিকর অবস্থায় রাখছেন। তাই এ ধরনের কাজগুলো এড়িয়ে যাওয়াই ভালো।

আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট

আপনার আইডি কার্ড বা পাসপোর্ট অথবা এই ধরনের কিছু ছবি আপলোড করা থেকে সবস ময় বিরত থাকবেন। যদি শেয়ার করতে হয়, আইডি কার্ডের নাম্বার, জন্ম তারিখ এ ধরনের তথ্যগুলো রিমুভ তারপর আপলোড করুন। নয়তোবা এই তথ্যগুলো হয়তো আপনার একাউন্ট হ্যাক করতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। সবথেকে ভালো হয় এই ধরনের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র শেয়ার না করা ভালো এবং শেয়ার করার কোনো কারণও হয়তোবা আপনার নেই তাই এগুলাে এড়িয়ে যাওয়াই উত্তম।

অন্য কারো কথায় কিছু শেয়ার করা

কেউ আপনাকে বলছে কিছু একটা পোস্ট শেয়ার করতে আর আপনি তাই সেই পোস্ট শেয়ার করছেন? এটাও কিন্ত ভুল। হয়তোব তথ্যটি মিথ্যা এবং যে আপনাকে বলছে সে নিজেও সেই বিষয়ে জানে না। তাই না জেনে না বুঝে ভুল তথ্য ছড়ানো কোনো ভাবেই উচিৎ না। খোঁজ খবর নিয়ে ভালো করে জেনে নিয়ে এরপর পোস্টটি শেয়ার করুন। তার আগে নয়। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র ফেসবুক টাইমলাইন না মেসেজেও একই ধরনের সমস্যা তৈরি করে থাকেন। তাই সতর্কতা অবলম্বন করে শেয়ার করাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

ঠিকানা

বাড়ির ঠিকানাকে ফেসবুকে দিয়ে রাখবেন? আপনার বন্ধু বান্ধব বা পরিচিত মানুষরা তো আপনার ঠিকানা জানেই। তবুও কেন ঠিকানা দিয়ে রাখবেন? বরং তাদের জন্যে নয় আপনি হয়তোবা খারাপ মানুষদেরকেই ঠিকানা দিয়ে দিচ্ছেন সেটা কি কখনও ভেবে দেখছেন? তাই কোনো ভাবেই বাড়ির ঠিকানা ফেসবুকে দেওয়া একটি ভুল কাজ। এটাকে এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন।

তাছাড়াও অনেক কিছুই আছে যা আমরা না জেনে বা বুঝে শেয়ার করি। মোবাইল নম্বর, জন্ম তারিখ, ই-মেইল ইত্যাদি হাইড করে রাখাই ভালো। তাছাড়াও পাসওয়ার্ডের সঙ্গে মিল থাকা যেকোন তথ্য বা পুরাতন পাসওয়ার্ড শেয়ার না করাটাই ভালো। সবসময় জেনে বুঝে শুনে কোনো কিছু শেয়ার করার চেষ্টা করুন।

আরও পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য সেরা ৫টি ওয়েবসাইট