করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন উপসর্গ

হাসিবুর
By -

করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন উপসর্গ — ঘ্রাণ এবং স্বাদ হারানোর পাশাপাশি শ্রবণ শক্তিতে সমস্যা তৈরি করতে পারে নতুন করোনাভাইরাস। দেড় বছরের বেশি সময় ধরে চলমান কোভিড-১৯ মহামারীতে ইতোমধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ গুলো সকলের জানা। তবে হ্যাঁ করোনাভাইরাস ও সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে তার রূপ পরিবর্তন করছে কয়েকবার। যার কারণে নতুন কিছু উপসর্গও দেখা যাচ্ছে। যা আগে এই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের মাঝে দেখা যেত না।

করোনাভাইরাসের ছোবল থেকে বাঁচার জন্য স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের নতুন এবং পুরানো উপসর্গ সম্পর্কে আমাদের জেনে রাখা দরকার। এতে করে নিজে সাবধান থাকার পাশাপাশি অন্যান্য জনকে সাবধান করতে পারবেন। আর সম্ভাব্য সংক্রণ টেরও পাওয়া যাবে। স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি সাইটের প্রকাশ করা প্রতিবেদন অবলম্বনে জানানো হচ্ছে করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন কয়েকটি উপসর্গ সম্পর্কে। 

চোখের প্রদাহ

কনজাংটিভাইটিস অর্থাৎ চোখ উঠাকে করোনাভাইরাস সংক্রমণের একটি লক্ষণ বলে দাবি করেছে চীনের সাম্প্রতিক গবেষণা। চোখ উঠার সমস্যায় চোখ লাল হয়ে জায়, চোখ জ্বালাপোড়া হয়, চোখ ফুলে যায়, চোখ থেকে পানি পড়ে এবং চোখে প্রচুর ময়লা জমে থাকে যার কারণে চোখ খুলতে অনেক কষ্ট হয়।

চীনের সেই গবেষণায় অংশগ্রহণ কারীদের মাঝে ১২ জনের করোনাভাইরাসের নতুন ‘স্ট্র্যান্ডয়ে’ আক্রান্ত হোন। আর সকলের মধ্যে চোখের সেই প্রদাহ দেখা দেয়। তাদের মধ্যে ১১ জন ব্যাক্তির নাক থেকে সংগ্রহ করা নমুনা পরীক্ষা করে দেখা গেছে তাদের ‘করোনা পজিটিভ’। অন্য ২জন ব্যক্তির নাক এবং চোখ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয় আর তাদের ২ নমুনাই ‘করোনা পজিটিভ’ দেখা যায়।

আমাদের চোখের মাধ্যমেও যে করোনা ভাইরাস সংক্রমণ হবার সম্ভব আছে সেটা ঠিক জোরালোভাবেই প্রমাণীত হয় সেই গবেষণার মাধ্যমে। আর চোখ থেকে ভাইরাস ফুসফুসে পৌঁছাতেও পারে। তবে হ্যাঁ শতভাগ নিশ্চিত হতে এবিষয়ে আরো পর্যবেক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে বলে স্বীকার করেন গবেষকগণ। 

আরও পড়ুনঃ প্রবীণদের মানসিক সুস্থতার ৫টি উপায়

শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া

তীব্রমাত্রায় নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের একটি উপসর্গ হচ্ছে শ্র্রবণশক্তি কমে যাওয়া। ইন্টারন্যাশনাল জার্নাল অফ অডিওলজি তে প্রকাশ করা এক গবেষণায় এমনটা দাবি করে। তাছাড়াও ১ কান কিংবা ২ কান থেকেই শব্দ শুনতে না পাওয়াও কোভিড-১৯ সংক্রমণের লক্ষণ। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে বলা হয় ‘টিনিটাস’। বাহ্যিক কোন শব্দ না, কানের মধ্যে থেকেই অনবরত কোন শব্দ আসছে এমনটা মনে হয়ে থাকে, যা আর কেউ শুনতে পায়না স্বভাবিক ভাবে। পরিসংখ্যান বলে করোনা ভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্ত 7.6% সাময়িক শ্রবণশক্তি হ্রাস পায়। 

পেটের গোলমাল

করোনাভাইরাস যেহেতু আমাদের শ্বাসতন্ত্রকে আক্রান্ত করে, তাই এর সাথে পেটের গোলমালের কোন সম্পর্ক থাকতে পারে সেটা ভাবতে না পারাটাই স্বাভাবিক। তবে হ্যাঁ অনেক রোগীর মধ্যে ডায়রিয়া এবং বমির সমস্যা দেখা যায়। তাই এই সময় বমি এবং ডায়রিয়াকে অবহেলা না করার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা। আর শুধুমাত্র শ্বাসতন্ত্রেই না, বৃক্ক, যকৃত এবং অন্ত্রেরও ক্ষতি করার ক্ষমতা রাখে এই করোনাভাইরাস। 

শারীরিক দুর্বলতা এবং আলসেমি

নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে বিবেচনা করা হয় শারীরিক দুর্বলতা এবং আলসেমিকে। ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পরে প্রায় সবাই প্রচণ্ড ক্লান্তি এবং অবসাদ অনুভব করেন কোনো ধরনের পরিশ্রম ছাড়াই। এর কারণ হিসাবে চিকিৎসকদের সম্ভাব্য ধারণা হচ্ছে ‘সাইটোকাইনস’এর উপস্থিতি। এই উপাদান তৈরি হয়ে থাকে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে কোন না কোন জীবাণুকে ধ্বংস করার মাধ্যম হিসেবে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখনি সেই জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়তে ব্যস্ত, শরীর তখনি ক্লান্তিতে ভেঙে পড়ে।

আরও পড়ুনঃ নতুন করোনাভাইরাসের ৩ লক্ষণ | করোনাভাইরাসের লক্ষণ ও চিকিৎসা কী

#buttons=(Ok, Go it!) #days=(20)

Our website uses cookies to enhance your experience. Learn more
Ok, Go it!